যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিতর্কিত পরিকল্পনা সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলেছে। পরিকল্পনাটি অনুযায়ী, গাজা উপত্যকার প্রায় ১০ লাখ ফিলিস্তিনি নাগরিককে স্থায়ীভাবে লিবিয়ায় পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশ পাওয়ার পরপরই বিশ্বজুড়ে নীতিনির্ধারক, মানবাধিকার সংগঠন ও বিশ্লেষকদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র লিবিয়ার সঙ্গে এই পরিকল্পনা নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা করেছে এবং এর বিনিময়ে দেশটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত থাকা কয়েক বিলিয়ন ডলারের তহবিল অবমুক্ত করারও প্রস্তাব দিয়েছে। এ পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে গাজাবাসীদের জন্য ‘নতুন বসবাসের স্থান’ তৈরি করার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে।
তবে এই উদ্যোগকে সরাসরি ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে লিবিয়ার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস (HoR)। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, ফিলিস্তিনি জনগণের জোরপূর্বক স্থানান্তর আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকারের পরিপন্থী। তারা এটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং মধ্যপ্রাচ্যে নতুন অস্থিতিশীলতা তৈরির হুমকি হিসেবে দেখছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোও বিষয়টিকে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছে। ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ না করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত গাজায় টেকসই শান্তি এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করা— এমন আহ্বান জানাচ্ছে বিভিন্ন মানবিক সংস্থা।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজা সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের পরিবর্তে জনগণকে অন্যত্র পাঠানোর প্রস্তাব সংকটকে আরও গভীর করতে পারে। বিষয়টি আন্তর্জাতিক আইনের আলোকে বিচার করে পরিণতি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
এই পরিকল্পনা এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হয়নি এবং বিভিন্ন পর্যায়ে কূটনৈতিক আলোচনা চলমান রয়েছে। তবে এতে যে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ ও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, তা স্পষ্ট।